
(১) নেপাল ভিসাঃ ঢাকাস্থ বারিধারায় নেপাল দূতাবাসে প্রতিদিন সকাল ১০-১১ টায় ভিসা আবেদন জমা নেয়া হয়। আবার পরের দিন বিকাল ৩ টা থেকে পাসপোর্ট ফেরত দেয়া হয়। কোনো ভিসা ফি লাগে না যদি আপনি সিল ভিসা নেন প্রতি বছরে প্রথমবার। ভিসা আবেদনপত্র নেপাল দূতাবাসের গেটে পাওয়া যায়। এছাড়া তাঁদের ওয়েবসাইটেও পাওয়া যায়। (আমি যা যা কাগজপত্র জমা দিয়েছিলামঃ পূরণকৃত ভিসা আবেদন ফর্ম, এক কপি ছবি, পাসপোর্টের তথ্য পৃষ্ঠার ফটোকপি, নেপালে একটা অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রের কপি, জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, শিক্ষার্থী পরিচয়পত্রের ফটোকপি, ঢাকা-কাঠমান্ডু-ঢাকা বিমান টিকেটের বুকিং কপি)
(২) ভারতীয় ট্রানজিট ভিসাঃ নেপাল ভিসা পাওয়ার পর আমার ভারত হয়ে নেপাল যাওয়ার সম্ভাব্য তারিখের ১০ দিন আগে ঢাকাস্থ যমুনা ফিউচার পার্কে ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রে ভারতীয় ট্রানজিট ভিসা আবেদনপত্র জমা দেই। ভিসা প্রসেসিং ফি ৬১৮ টাকা। (আমি যা যা কাগজপত্র জমা দিয়েছিলামঃ পূরণকৃত ভিসা আবেদনপত্র, ছবি এক কপি, জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, শিক্ষার্থী পরিচয়পত্রের ফটোকপি, বিদ্যুত বিলের ফটোকপি, নেপালের অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রের কপি, আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডের ফটোকপি, পাসপোর্টের তথ্য পৃষ্ঠা এবং এনডোর্সমেন্ট পৃষ্ঠার ফটোকপি, ঢাকা-বাংলাবান্ধা-ঢাকা বাসের টিকেটের মূলকপি এবং ফটোকপি)
(৩) নেপালের জন্য ভারতীয় ট্রানজিট ভিসায় ফুলবাড়ী/রানীগঞ্জ স্থলবন্দরঃ সচরাচর বাংলাদেশিরা ভূটান কিংবা নেপাল ভারত হয়ে ভ্রমণের ক্ষেত্রে “চ্যাংড়াবান্ধা/জঁয়গাও” অথবা “চ্যাংড়াবান্ধা/রানীগঞ্জ” স্থলবন্দর ব্যবহার করলেও আমি আমার ক্ষেত্রে সময় বাঁচানো এবং দ্রুত ভারতের সীমানা অতিক্রম করার জন্য “ফুলবাড়ী/রানীগঞ্জ” স্থলবন্দর দিয়ে আবেদন করি। ভারত অংশের ফুলবাড়ী হল বাংলাদেশের বাংলাবান্ধা। যেখানে চ্যাংড়াবান্ধা থেকে শিলিগুড়ি যেতে ২-২.৩০ ঘন্টা সময় লাগে সেখানে ফুলবাড়ী থেকে শিলিগুড়ি যেতে মাত্র ৩০ মিনিটের মত সময় লাগে।
(৪) বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরঃ এখানে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস পর্ব শেষ করে একটা ব্যাটারী চালিত অটো তে করে চলে যেতে হবে ফুলবাড়ী তথা ভারতীয় স্থলবন্দরে। বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে ইমিগ্রেশন পুলিশ ১০০ টাকা, কাস্টমস ৫০ অথবা ১০০ টাকা, স্থলবন্দর ফি ৫০ টাকা, ভ্রমণ কর ৫১০ টাকা এবং অটো ভাড়া ১০ টাকা দিতে হবে। বলাবাহূল্য যে, ফুলবাড়ী প্রবেশের আগে বিজিবি’র চেকপোষ্টে আপনার পাসপোর্ট এবং ভিসা তথ্য লিপিবদ্ধ করাতে হবে।
(৫) ফুলবাড়ী স্থলবন্দরঃ অটো থেকে নেমেই প্রথমে বিএসএফ এর চেকপোষ্টে আপনার পাসপোর্ট ও ভিসা তথ্য লিপিবদ্ধ করাতে হবে। তারপর বিএসএফ জোয়ান চালিত ব্যাটারী টোটো তে করে চলে যেতে হবে ইমিগ্রেশন ভবনে। ভাড়া ১৫ টাকা। ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস শেষ করতে এখানেও ১০০ টাকা করে মোট ২০০ টাকা দিতে হবে। তবে কাস্টমস এ ৫০ টাকা দিয়েও কাজ হয় কিন্তু ইমিগ্রেশন পুলিশ ১০০ টাকার নিচে ছাড়ে না।
(৬) ফুলবাড়ী স্থলবন্দর থেকে ফুলবাড়ী শহরঃ স্থলবন্দরের কাজ শেষে ১০ রুপি দিয়ে টোটো তে করে ফুলবাড়ী শহরে আসতে পারবেন। সময় লাগবে ১০ মিনিট।
(৭) ফুলবাড়ী শহর থেকে শিলিগুড়িঃ যেখানে টোটো থেকে নামবেন সেখান থেকেই শিলিগুড়ি জংশন যাওয়ার বাস পাবেন। ভাড়া ১০ রুপি। সময় লাগবে ১৫-২০ মিনিট।
(৮) শিলিগুড়ি জংশন থেকে পানিট্যাংকিঃ শিলিগুড়ি জংশন থেকে পানিট্যাংকি তথা রানীগঞ্জ নেপাল বর্ডার যাওয়ার বাস পাবেন। ভাড়া নিবে ৩০ রুপি। সময় লাগবে ১.৩০ থেকে ২ ঘন্টা।
(৯) পানিট্যাংকি থেকে রানীগঞ্জ ইমিগ্রেশন অফিসঃ পানিট্যাংকি নামার পর হেঁটে হেঁটে ইমিগ্রেশন অফিস যেতে পারেন সময় লাগবে ৭-৮ মিনিট। রিক্সায় গেলে ২-৩ মিনিট লাগবে, ভাড়া ১০ রুপি।
(১০) রানীগঞ্জ ইমিগ্রেশনঃ এই অফিসটি একদম নিরব থাকে। আপনি যেদিক থেকে আসবেন তার হাতের বাম দিকে এই অফিসটি মানে একটা গলির ভিতরে। এইখানে কোনো পর্যটক আসে না বললেই চলে। তাই কেউ আসলে ইমিগ্রেশন পুলিশ কে পাশের রুম থেকে ডেকে আনা হয়। আমার দেখা সবচেয়ে দূর্নীতিগ্রস্থ ইমিগ্রেশন এটি। আপনার যদি নেপাল ভিসা এবং ভারতীয় ট্রানজিট ভিসা থাকে তারপরেও আপনাকে অনির্ধারিত ৫০০ রুপি দিতেই হবে। এইটা নাকি তাদের ফি। আর যদি আপনার ভারতীয় ট্যুরিষ্ট ভিসা থাকে তাও আপনি এখান থেকে ইমিগ্রেশন শেষ করে নেপাল যেতে পারবেন। সেক্ষেত্রে ১৫০০, ২০০০, ৩০০০ রুপি যার থেকে যেমন নিতে পারে। ইমিগ্রেশন শেষ করতে ২-৩ মিনিট লাগবে।
(১১) রানীগঞ্জ থেকে কাঁকরভিট্টাঃ রানীগঞ্জ ইমিগ্রেশন অফিস থেকে বের হয়ে একটা রিক্সা নিয়ে কাঁকরভিট্টা তথা নেপাল ইমিগ্রেশন যেতে পারেন। ভাড়া নিবে ২০ রুপি। সময় লাগবে ১০ মিনিট। আর হেঁটেও যেতে পারবেন। সেক্ষেত্রে সময় লাগবে ২০ মিনিটের মত। হেঁটে গেলে ভালো লাগবে কারণ এইখানে ভারত আর নেপাল কে একটা নদী বিভক্ত করেছে, যার উপর একটা ব্রীজ নির্মিত আছে। আর আপনি এই ব্রীজের উপর দিয়েই নেপালে প্রবেশ করবেন।
(১২) কাঁকরভিট্টা ইমিগ্রেশনঃ অবশেষে আপনি নেপালে প্রবেশ করলেন। এখানে আসার পর নেপালের গেট দেখেই ঢুকে পরবেন না। আপনি বাংলাদেশি হিসেবে কাজ হবে প্রথমে আপনি যেদিক থেকে এসেছেন তার ডান দিকে ইমিগ্রেশন ভবনে চলে যাওয়া। সেখানে ইমিগ্রেশনে শুধুমাত্র একটি ফর্ম পূরণ করলেই চলে, আর কিছু করা লাগে না। এখানে একটি কথা ঊল্লেখ্য যে, আপনার কাছে বকশিশ চাইবে কিন্তু জোর করবে না। আপনি না দিলে কিছু বলবেও না এবং ব্যবহারও খারাপ করবে না। তবে আপনার যদি নেপাল ভিসা না থাকে তাহলে ২০০ রুপি দিতেই হবে। আমি যাওয়ার সময় কোনো রুপি দেই নাই কিন্তু আসার সময় ইমিগ্রেশনের একটা ছেলে আছে তাকে ৫০ রুপি দিয়ে এসেছি। কারণ সে আমাকে ব্যক্তিগতভাবে একটু সাহায্য করেছে যেটা কিনা আমার খুব প্রয়োজন ছিল সে সময়। তবে সে নিতে চায়নি। আমি জোর করে দিয়ে এসেছি। এইটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার ছিল। এটাকে ঘুষ বলে চালিয়ে দিবেন না।
(১৩) কাঁকরভিট্টা ইমিগ্রেশন থেকে কাঠমান্ডুঃ ইমিগ্রেশন শেষ করে হেঁটে হেঁটে চলে যাবেন কাঁকরভিট্টা বাস স্টেশন। যেতে সময় লাগবে ৫-৬ মিনিট। নেপাল গেট পার হওয়ার একটু পরেই দেখবেন অনেক গুলো মানি এক্সচেঞ্জ আছে। সেখান ডলার থেকে নেপালি রুপি, ভারতীয় রুপি থেকে নেপালি রুপি করে নিতে পারেন। এরপর সামনে যেতেই বাস টিকেটের কাউন্টার পেয়ে যাবেন। যেহেতু আমি নেপালি ভাষা পারি না তাই হিন্দিতে বলেছি কাঠমান্ডুর টিকেট দিন। কাঁকরভিট্টা থেকে কাঠমান্ডুর এসি বাসের ভাড়া ১৭০০ নেপালি রুপি। আর নন এসি ডিলাক্স বাসের ভাড়া ১৩০০ নেপালি রুপি। আমি নেপাল স্থানীয় সময় দুপুর ১২.৩০ টায় বাসে ঊঠি এবং পরেরদিন ভোর ৬ টায় কাঠমান্ডু পৌঁছাই। এর মাঝে বাস ৩ বার বিরতি দিয়েছে। বাসে ওয়াইফাই আছে বলা থাকলেও কোনো কাজ করে না।
(১৪) কাঠমান্ডু বাস স্টেশন থেকে থামেল এবং কাঠমান্ডুর বিস্তারিতঃ এইখানে আমি তেমন কোনো তথ্য দিতে পারব না কারণ আমি একটা অনুষ্ঠানে এসেছিলাম বিধায় সেখান থেকেই আমার থাকার ব্যবস্থা এবং আমাকে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। তবে থামেল এলাকায় সব ট্যুরিষ্টরা থাকে। আমি থামেলের পাশেই বীরকুটিমন্দপ এলাকায় গিয়েছিলাম। আর আমি দরবার স্কয়ার এবং পশুপাতিনাথ মন্দিরে গিয়েছিলাম। আমার কাছে তেমন ভালো লাগে নাই। আপনাদের কাছে আবার অনেক ভালো লাগতেও পারে। এটা আসলে যার যার পছন্দের ব্যাপার। আর ভূমিকম্পের পর কাঠমান্ডু কেমন জানি হয়ে গেছে।
(১৫) কাঠমান্ডু থেকে পোখারাঃ কাঠমান্ডু থেকে আমি মাইক্রোবাসে করে গিয়েছি। ভাড়া নিয়েছিল ৭০০ নেপালি রুপি। সময় লেগেছে ৫ ঘন্টা। আর আপনি চাইলে বাসেও যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে সময় লাগবে ৬-৭ ঘন্টা। বাসের ভাড়া ৮০০-১০০০ নেপালি রুপির মধ্যে।
(১৬) পোখারা বাস স্টেশন থেকে লেকসাইডঃ পোখারা বাস স্টেশনে নামার সাথে সাথেই দালালরা আপনাকে ধরতে পারে। আপনি চাইলে তাদের এড়িয়ে যেয়ে গাড়ী অথবা বাসে করে লেকসাইড চলে যেতে পারেন। বাসে ভাড়া নিবে ২০ নেপালি রুপি। সময় লাগবে ১০-১৫ মিনিট।
(১৭) পোখারায় হোটেলঃ লেকসাইড হল পোখারার ট্যুরিষ্ট এলাকা। এখানে অনেক হোটেল পাবেন। ৫০০ নেপালি রুপি দিয়েও হোটেল পাবেন। কিন্তু আমি আমার প্রয়োজনে পোখারা বাস স্টেশনের কাছেই একটা হোটেলে ছিলাম। ভাড়া ৬০০ নেপালি রুপি ছিল।
(১৮) পোখারায় ঘুরাঘুরিঃ পোখারা আসলে খুবই সুন্দর জায়গা। বিশেষ করে ফেওয়া লেক খুবই সুন্দর ও আকর্ষণীয়। পোখারায় আপনি অনেক কিছুই করতে পারেন। আমি একটু খোলামেলা যদি বলি তাহলে থাইল্যান্ডের পাতায়ার অনেক কিছুই পাবেন এইখানে, যেগুলো আমার পক্ষ থেকে এই পাবলিক গ্রুপে বলা সমীচিন হবে না। তাছাড়া নৌকা চালাতে পারেন। এক ঘন্টা ৭০০ নেপালি রুপি নিবে। রাফটিংও করতে পারেন। প্যারাগ্লাইডিং করতে পারেন ৬০০০ নেপালি রুপির বিনিময়ে। বাঞ্জি করতে পারেন ১০০০০ নেপালি রুপিতে। জীপ ফ্লাইং করতে পারেন ৫০০০ নেপালি রুপিতে।
(১৯) পোখারা থেকে কাঁকরভিট্টাঃ বাস টিকেট পোখারা বাস স্টেশনেই পাবেন। ভাড়া নিবে নন এসি ডিলাক্স বাসে ১২৫০ রুপি। আমি বাসে উঠেছিলাম বিকাল ৫ টায় আর কাঁকরভিট্টায় পৌঁছাই সকাল ৯ টায়।
(২০) খাবার-দাবারঃ নেপালে সব কিছুই আমার কাছে দাম বেশি মনে হয়েছে। যেমন প্রাণ কোম্পানীর ফ্রুটোর ৫০০ মিলির দাম ১০০ নেপালি রুপি, ইন্ডিয়ান লেইস চিপস ৬০ নেপালি রুপি, ভাতের থালি ৩০০ নেপালি রুপি, একটা বন রুটি ৪০ নেপালি রুপি, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ১০-১২ টা ১২০ নেপালি রুপি ইত্যাদি। এই জন্য খাবার-দাবার নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না কারণ এইটা অনেকটা ব্যক্তির রুচির উপর নির্ভর করবে।
***কিছু কথাঃ আমি একা ভ্রমণে অনেক তথ্যে না জানার কারণে কিছুটা দৌড়ের উপর ছিলাম। তাই আপনাদের সুবিধার্থে আমার অভিজ্ঞতা থেকে বিস্তারিত বলার চেষ্টা করেছি। আমার অভিজ্ঞতা আপনার সাথে নাও মিলতে পারে আবার আমার থেকেও খারাপ অভিজ্ঞতা হতে পারে। আমি আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বললাম। সময়, কাল, পাত্রভেদে আপনার ক্ষেত্রে বিষয়গুলো পরিবর্তনও হতে পারে।
***আমার মতামতঃ কেউ যদি ভারত হয়ে নেপাল যেতে চান তাহলে আমার ব্যক্তিগত মতামত হল না যাওয়াই ঊত্তম।
যে পরিমাণ টানা ভ্রমণ করতে হয় তাতে করে আপনি অনেক ক্লান্ত হয়ে যাবেন। স্থলবন্দরের ঝামেলা, ভিসা জটিলতা, পদে পদে গাড়ি পরিবর্তন করা, টানা দুইদিন ভ্রমণের মধ্যেই থাকা ইত্যাদি বিষয় যদি দেখেন তাহলে বিমানে যাওয়াই ঊত্তম। বিশেষ করে নেপালের বাস ভ্রমণ খুবই বাজে অভিজ্ঞতা।
দূরপাল্লার বাসেও তারা লোকাল যাত্রী ঊঠায় নামায়। এমনকি বাসে দাঁড়িয়েও যাত্রী যায়। বাসের সিটে পা রাখার জায়গা খুব কম। ফলে ১৬-১৮ ঘন্টা বাস ভ্রমণে পা ব্যাথা হয়ে যায়। বাসের সিটগুলোর প্রসারতা ছোট। আমাদের দেশের নন এসি বাস গুলোও নেপালের বাস থেকে অনেক অনেক অনেক ভালো। অন্তত পা নাড়ানো যায় আর আরামে বসা যায় আমাদের দেশের বাসগুলোতে।
একদিকে হিসাব করলে একজন ব্যক্তির ভিসা করা থেকে শুরু করে কাঠমান্ডু পৌঁছানো এবং ঢাকায় ফিরে আসা পর্যন্ত খাবার-দাবার, ভ্রমণ কর, ঘুষ, অনির্ধারিত ফি, বাস ভাড়া ইত্যাদি মিলিয়ে প্রায় ৮০০০-১০০০০ টাকাই খরচ হয়ে যায়। আপনার যেতে আসতে প্রায় ৪ রাত ৩ দিনের মত সময় লাগবে। আর মানসিক, শারীরিক কষ্টের হিসাব বাদই দিলাম। সব মিলিয়ে কেন এত কষ্ট করে নেপাল যাবেন!!! যেখানে বিমানে মাত্র ১৬০০০ টাকায় যাওয়া আসা করা যায় তাও আবার যাওয়া আসা তে মাত্র ৩ ঘন্টা সময় লাগে।
এখন অনেকেই বলতে পারেন যে, সড়কপথে গেলে নেপালের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। এটা একটা ভুল কথা। আপনি যাত্রা পথে ভূটানের রাস্তার মত কোনো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই দেখতে পাবেন না।
আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলব ভূটান গেলে সড়ক পথে গেলে অনেক কিছু দেখা যায় কিন্তু নেপালে তার ১% ও দেখা যায় না। শুধুমাত্র ধুলোবালি আর ময়লা রাস্তাঘাট দেখতে পারবেন।
আমি আবারও বলছি, এইটা শুধুমাত্র আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও মতামত। আমি কাউকে না যাওয়ার জন্য বলছি না। কিন্তু গেলে হয়তোবা আপনি এই সমস্যা গুলোয় পড়তে পারেন। আর বাকিসব আপনার বিবেচনা।
আমাকে যদি কেউ এইসব তথ্যগুলো আগে থেকে জানাতো তাহলে আমি কখনই এতো কষ্ট করে যেতাম না। বিমানে যেতাম ভাই। ৫০০০-৬০০০ টাকা বাঁচানোর জন্য এতো কষ্ট করার কোনো কারণ দেখি না আমি ব্যক্তিগতভাবে।
FB PROFILE